ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ , ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নতুন বাজেটে বৈষম্য কমবে সব ক্ষেত্রে সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হবে ৬০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়ে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা অভিযান ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে ‘যীশু খ্রিস্টের কষ্ট’র সঙ্গে তুলনা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ,প্রতিবাদে চালকদের মিছিল নরসিংদীতে রাতে স্ত্রীর দিনে স্বামীর লাশ উদ্ধার আইন উপদেষ্টার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে শিবির নেতার স্ট্যাটাস বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নেতা ঢাকায় আত্মগোপনে দিনাজপুরে ৩১৬ চালকলের লাইসেন্স বাতিল জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাভোগী ও সুবিধাবাদী দল নয় - জিএম কাদের এনসিপি’র জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স হবে সর্বনিম্ন ৪০ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ অমানবিক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ পাঁচ দাবি বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেবে সরকার-পরিবেশ উপদেষ্টা তীব্র সঙ্কটেও দেশে গ্যাসের চুরি ও অপচয় বন্ধ হচ্ছে না গাজায় ইসরায়েলি নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ নড়াইলে সৌদি প্রবাসী হত্যা হামলা-ভাঙচুরের পর পুরুষশূন্য গ্রাম প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
* সিন্ডিকেটের সদস্যরা আনফিট ক্রুদের ফিট বলে ফ্লাইটে পাঠাচ্ছে * হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা

চক্রে বন্দি বিমানক্রুদের শিডিউল নিয়ন্ত্রণ

  • আপলোড সময় : ১১-০৯-২০২৪ ১২:৩২:২৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৯-২০২৪ ১২:৩২:২৬ পূর্বাহ্ন
চক্রে বন্দি বিমানক্রুদের শিডিউল নিয়ন্ত্রণ
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্রুদের শিডিউল নিয়ন্ত্রণ করে প্রতি মাসে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৬০০ জন ক্রু’র সিডিউল নিয়ন্ত্রণ করে আসছে আবীরের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। গত ১৮ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে কর্মরত চুক্তিভিত্তিক ৩৯০ জন কেবিন ক্রু কর্মবিরতি করে। তারা চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে কর্মরত আছেন ৬৩০ জন কেবিন ক্রু। এদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন ৩৯০ জন। দিনের পর দিন একই কর্ম পরিবেশে চলছে দুই রকমের বৈষম্য। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য আবীরের নেতৃত্বে গড়ে উঠা সিন্ডিকেটের সদস্যরা পল্টিমেরে বিএনপি সেজেছে। বর্তমানে আবীরের দৌরাত্ম্যে অস্থির বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিবেশ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ক্রুদের সিডিউল দিয়ে ফিরুজ মিয়া ওরফে আবীর প্রতি মাসে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আবীরের সাথে জড়িত রয়েছে যুবিন, সাদ, আতাহার, যুবায়ের, লোটাস, মাকামা, হৃদয় বণিক ও আপন সিনহা।
গত ৫ আগস্ট পূর্ব থেকে এরা ছাত্র- জনতার অভ্যুত্থান সম্পন্ন পর্যন্ত বিমানের অভ্যন্তরে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। তাদের মূল কাজ ছিল কর্মকর্তাদের উপর চাপপ্রয়োগ করে বিমানের ক্রুদের শিডিউল  নিয়ন্ত্রণ করা। যার বিনিময়ে মাসিক আয় হতো প্রায় ৩০ লাখ টাকা। ক্ষমতাসীনদের সাথে সখ্যতার প্রমাণ হিসেবে তারা সবসময় নিজেদের ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রভাবশালীদের সাথে তোলা ছবি পোস্ট করতেন। সোস্যাল মিডিয়ায়  এমন প্রমাণ রয়েছে। এই চক্রের মূল হোতা ছিল আবীর, যুবিন, সাদ, আতাহার, যুবায়ের, লোটাস, মাকামা, হৃদয় বণিক, আপন সিনহা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক এক আইন বিষয়ক সম্পাদকসহ প্রায় ৩০/৪০ জনের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বলে জানা গেছে। তাদের কাজ ছিল টাকার বিনিময়ে ক্রুদের ভালো সুবিধাজনক দেশে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা। তারা অবৈধভাবে টাকা নিয়ে ক্রদের ভিআইপি ও ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া। ভিআইপিদের সাথে পরিচয়ের সুবাদের বায়রাতের নানান কাজের সুপারিশ করিয়ে বিপুল অর্থ আয় করা। অনেকেই স্বর্ণ চোরাচালান, লাগেজের মাধ্যমে মূল্যবান প্রসাধনী, আন্ডার গার্মেন্টস এবং মানিলন্ডারিংয়ের সুযোগ করে দেয়া। এই আবীর গং ৫ আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল বলে জানা গেছে। তারা বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরের কেউ যেন ছাত্রদের আন্দোলনে অংশ নিতে না পারে তাই তারা প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়ে আসছিল। যার প্রমাণ ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিজয়কে উপেক্ষা করতে শেখ কামালের জন্মদিন পালনের উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি। ৫ আগস্টের ভোল পালটে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের আগমনের দিনে বিমানবন্দরে ব্যানার এবং ফুলের মালা নিয়ে প্রস্তুত থাকে। আবার সুযোগ বুঝে ১২ আগস্ট এবং ২০ আগস্ট আনসার সদস্যরা সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির সময় সুযোগ বুঝে দায়িত্ব পালন করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বিমানের সিডিউল বিপর্যয় ঘটাবার জন্য সকল কম্পিউটারের তার ছিড়ে ফেলেছিল বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বর্তমান বিষয়টি নিয়ে বিমান বাংলাদেশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্রুদের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
উক্ত ঘটনায় সিডিউল বিপর্যয় হলে বিশ্ব দরবারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং বিমান বাংলাদেশ হেয় প্রতিপন্ন হতো বলে ধারণা করা হয়। এই ঘটনায় অজ্ঞাত কারণে বিমান বাংলাদেশ কোনো মামলা বা কোনো তদন্ত কমিটি করেনি বলে জানা গেছে। এই আবীর চক্রের প্রায় সকলেই সাবেক সরকারের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এরা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় শেখ সেলিম, বাহাউদ্দীন নাসিম, সাইফুজ্জামান শেখর, বিপ্লব বড়ুয়া, হাফিজুর রহমান লিকু সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিএস-২ এবং ডিবি হারুনের সাথে ছিল ভীষণ খাতির। তারা এই সকল নিকটজন পরিচয়ে লাভবান রুটের ফ্লাইট তাদের ভাগ্যে জুটত বলে জানা গেছে। আবীর চক্রটি সকল ভিআইপি ফ্লাইটগুলো নিয়ন্ত্রণ করায় লাগেজ এবং বিভিন্ন উপায়ে স্বর্ণ চোরাচালান অভিযোগও রয়েছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে।
বিমানের ফ্লাইট পার্সার হলেও আবীরের রয়েছে প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদ-সম্পত্তি বলে জানা গেছে । অনুসন্ধানে জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কয়েকটি প্লট, বসুন্ধরার পাশে একটি প্লট যেখানে ৮ তলা ভবন নির্নীয়মান, মোহাম্মদপুরের চানমিয়া হাউজিংসহ রাজধানীর নানান স্থানে তার রয়েছে শতকোটি টাকার সম্পত্তি। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে আবীর একটি এনার্জি বাল্ব ফ্যাক্টরির মালিকানা রয়েছে। সাথে গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটে রয়েছে এই চক্রের ফ্লাইটে আনা লাগেজের মালামাল বিক্রির জন্যে ২টি দোকান। অন্যদিকে ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে রয়েছে নামে বেনামে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ-সম্পত্তি। এই সম্পদ অর্জনে পিছনে রয়েছে চোরাচালান এবং ফ্লাইট শিডিউলিং নিয়ন্ত্রণ। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফিরুজ মিয়া আবীর জানান, তার এমন সম্পদ-সম্পত্তি রয়েছে কথা পুরো সঠিক নয়। তার যারা ভালো চায় না, তাদের কারসাজি বলে অভিযোগ করেন। আবীর আরো জানান, তিনি ক্রুদের ফ্লাইট সিডিউল নিয়ন্ত্রণের সাথে জিড়িত নন। তিনি ৫ আগস্ট শেখ কামালের জন্মদিন পালনের চিঠি ইস্যুর কথা স্বীকার করেন। উল্লেখিত ক্রদের সাথে সাথে অন্যান্য ক্রুদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভূমিকা, স্থাবর অস্থাবর সম্পদ-সম্পত্তি এবং অর্থের খোঁজখবরও নেয়া হচ্ছে।
আবীরের প্রধান সহযোগী যুবিনের সাথে কথা বললে সে অবৈধ সম্পদ এবং আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ছাত্রদের আন্দোলনে অংশ না নিয়ে অভ্যুত্থান পরবর্তীতে সরকারকে বিব্রত করার কারণ কি। তার ভাষ্য তারা ক্রুদের আন্দোলন নিবৃত করতে নোটিশ করেছিলেন। ৫ আগস্টে আগে কি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার যোগ দিতে ক্রুদের তাগিদ দিয়েছিলেন। এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দিতে পারেনি তাদের অনেকেই। যারা যে কোনো সময় নিজেদের সুবিধায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কমপ্লিট শার্টডাউনের মতো ঘটনা ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিপাকে ফেলতে পারে গোটা বিমান চলাচল ব্যবস্থা।
অপরদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা যায়, চেহারা দেখে এবং বিমানে প্রভাব বিস্তার করে এমন অনেক ক্রু’র ওজন বেশি থাকার পরও ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেয়া হয়। অপরদিকে, ঠুনকো কারণে ‘আনফিট’ ঘোষণা করা হয় ‘ফিট’ ক্রুদের। বিমানের ক্রুদের মেডিকেল পরীক্ষা ও ফিট সনদ দেয়ার কাজটি করে বিমান মেডিকেল সেন্টার। এ সেন্টারে পাঁচজন চিকিৎসক রয়েছেন। তবে, এক্ষেত্রে চিফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও) ডা. তাসলিমা আখতারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অনেক ক্রু তার বিষয়ে ‘স্বজনপ্রীতি’ করে ফিটনেস সনদ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
নাহিদ হাসান নামের বিমানের এক কেবিন ক্রু বলেন, বিমানের ক্রুদের চার মাস পরপর মেডিকেল সেন্টারে রিপোর্টিং করতে হয়। বিএমআই অনুযায়ী উচ্চতা ও ওজনের সমন্বয় থাকলে তাকে ‘ফিট’ সার্টিফিকেট দেয়া হয়। নিয়োগের সময় আমাদের বছরে দুবার অর্থাৎ ছয় মাসে একবার ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য বিমানের মেডিকেল সেন্টারে রিপোর্ট করতে বলা হয়। তবে, বর্তমান সিএমও হয়তো ‘গিফট পাওয়ার আশায়’ চার মাসে একবার রিপোর্টিং বাধ্যতামূলক করেছেন।
পৃথিবীর সব দেশে জামা-কাপড়ের জন্য শরীরের ওজন থেকে ৫ থেকে ১০ পাউন্ড ছাড় দেয়া হয়। বিমানে এ ছাড় শুধুমাত্র মুখ দেখে দেয়া হয়। গত অক্টোবর মাসে অনেক ক্রু-কে বিমান থেকে বাদ দেয়া হয়। কারণ, তাদের পরনের জামা-কাপড়ের ওজন নির্ধারিত ওজনের চেয়ে ২/১ পাউন্ড বেশি ছিল।
সাকলাইন আহমেদ নামের আরেক ক্রু বলেন, এ সার্টিফিকেট দেন বিমানের সিএমও ডা. তাসলিমা। অনেক ক্রু’র অক্টোবরের ১ তারিখে মেডিকেল রিপোর্টিং ছিল। তবে, ডা. তাসলিমা ৭/৮ দিন ছিলেন না। তাই তারা অক্টোবরের ১০ তারিখের পর মেডিকেল করেন। ওজন কয়েক কেজি বেশি থাকায় তাদের ৩০ অক্টোবর যেতে বলা হয়। তিনি অনেক ক্রু ও কর্মচারীর মেডিকেল রিপোর্টিং বই নিজের কাছে আটকে রাখেন। অথচ সেগুলো থাকার কথা রিপোর্টিং রুমে। তিনি (সিএমও ডা. তাসলিমা) অফিসে না থাকলে ক্রু ও কর্মচারীরা মেডিকেল রিপোর্ট করতে পারেন না। ফলে তারা ফ্লাইটে যেতে পারেন না। অনুপস্থিত দেখিয়ে বেতন থেকে টাকা কাটা হয়। অথচ বিএমআই থেকে অনেক বেশি ওজনের ক্রু’রা ডা. তাসলিমাকে ‘গিফট’ দিয়ে ‘ফিট’ সার্টিফিকেট নিচ্ছেন। এমনকি ভিআইপি ফ্লাইটেও ডিউটি করছেন তারা। বিএমআই’র সঙ্গে ওজনের সমন্বয় নেই কিন্তু ফিট সনদ পেয়েছেন এমন কয়েকজনের তালিকা তৈরি করেছে বিমানের একটি বিভাগ। অতিরিক্ত ওজন (ওভারওয়েট) নিয়ে বিমানে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে চিফ পার্সাররা হচ্ছেন-মুক্তা, দুলালি, খুকু, মাসুমা, মেঘলা, নিরা, নিশি ও রোকসানা। ফ্লাইট পার্সারদের মধ্যে আছেন- আজমি, সাঈদা, কবিতা, মনির, মুন্নি, রুবা ও শিল্পী। জুনিয়র পার্সার হলেন-তাহরিমা, সানজানা, নতুন ও তন্নী। ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেসদের মধ্যে আছেন- দিয়া ভেনাস, মেনকা, শান্তা, পৃথা, অন্যমা, অর্পা ও ফারহানা।
এ প্রসঙ্গে বিমান মেডিকেল সেন্টারের সিএমও ডা. তাসলিমা আখতার বলেন, যারা ওভারওয়েট, তারা গ্রাউন্ডেড থাকেন (ফ্লাইট পরিচালনা থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়)। নির্দিষ্ট সময় পরপর তাদের টেস্ট করানো হয়। অনেক সময় ক্রু-শর্টেজ থাকলে ম্যানেজমেন্টের অনুমতি নিয়ে তাদের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ‘ফিট’ ধরা হয়। আবার যখন ওভারওয়েট হয়, তখন গ্রাউন্ডেড করে দেয়া হয়। বিষয়টা এভাবেই হয়। শুধু ক্রু নয়, বর্তমানে বিমানের দুই পাইলট অতিরিক্ত ওজন (ওবিজ) থাকা সত্ত্বেও ফিট হিসেবে ফ্লাইট পরিচালনা করছেন। এভিয়েশনের ভাষায়, কোনো পাইলটের ওজন যদি বিএমআই মান থেকে ৩০ শতাংশ বা তারও বেশি হয় তাকে ‘ওবিজ’ বলে। বিমানের ক্যাপ্টেন ইসমাইল ও ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক ওবিজ ক্যাটাগরিতে পড়েন। বেবিচকের নির্দেশনা থাকার পরও তাদের হৃদরোগ পরীক্ষা বা হেলথ চেক-আপ ছাড়াই ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান মেডিকেল সেন্টারের সিএমও ডা. তাসলিমা আখতার বলেন, ক্যাপ্টেন হচ্ছেন পাইলট। পাইলটদের সার্টিফিকেশনটা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) থেকে হয়। আমি তাদের মেডিকেল অ্যাপ্রুভাল দিই না।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ভিন্ন কথা। এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, নিজ নিজ এয়ারলাইন্স পাইলটদের প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিবাচক হলে তারা লাইসেন্স নেয়ার জন্য বেবিচকের কাছে পাঠায়। বেবিচকের কিছু মেডিকেল রিকয়ারমেন্টস আছে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তারা যদি আনফিট হন তাহলে ফিট হতে সময় দেয়া হয়। এটা একটা রুটিন প্রসেস।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও বিশিষ্ট এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ক্রুদের ফিট থাকার সঙ্গে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পৃক্ত। কেবিন ক্রু’রা শুধু খাবার পরিবেশন করেন না। উড়োজাহাজে তাদের অনেক দায়িত্ব থাকে। সাধারণ ইমার্জেন্সি বা মেডিকেল ইমার্জেন্সি- সব কাজ তাদের করতে হয়। কাজগুলো করতে ফিজিক্যাল ফিটনেস অত্যন্ত জরুরি। ক্রু যদি ফিজিক্যালি আনফিট হয় তাহলে আপনি ঠিকমতো সার্ভিসগুলো যাত্রীকে দিতে পারবেন না। খুব কঠোরভাবে এয়ারলাইন্সগুলোকে এটা মেইনটেইন করা উচিত। এতে যেমন যাত্রীদের ঝুঁকি কমবে, বিমানের সেবার মানও বাড়বে। তবে ক্রুদের সিডিউল সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য